সিলেট:: সিলেটের পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে ৭২ ঘণ্টার ধর্মঘটে পালন করছে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। আর এমনিতেই গতকাল থেকে ৪৮ ঘন্টার অটোরিক্সা সিএনজি ধর্মঘট চলছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা। মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে ধর্মঘট হলেও এর আগ থেকেই সিলেটের বিভিন্ন রাস্তায় অবস্থান নেন পরিবহন ও পাথর সংশ্লিষ্ট শ্রমিকরা। তারা কোনো অবস্থাতেই কোনো ধরনের রাস্তায় চলতে দিবেন না বলে জানিয়েছেন। সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের তেমুখি, সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের চন্ডিপুল ও তেলিবাজারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ও রাস্তায় পিকেটিং করছেন শ্রমিকরা।
বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে দেখা গেছে, রিকশা ছাড়া চলছেন না কোনো ধরনের যানবাহন। পায়ে হেটে অনেকেই যাচ্ছেন কর্মস্থলে। পথে পথে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন মানুষ।
সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জে পরিবহণ মালিক-শ্রমিকরা মঙ্গলবার ভোর থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন। সেখানকার বাস, ট্রাক, ট্যাংকলরি, মাইক্রোবাস, লেগুনা ও সিএনজি’সহ সকল প্রকার পরিবহনের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে মিছিল, সমাবেশ করেছেন।
মঙ্গলবার সকাল থেকে দিনভর সিলেট জেলার সকল উপজেলায় মিছিল-সমাবেশ করেন মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দ। দক্ষিণ সুরমার হুমায়ুন রশিদ চত্বরে শান্তিপূর্ণ ভাবে অবস্থান নেন সিলেট বিভাগীয় ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহবায়ক আলহাজ¦ গোলাম হাদী ছয়ফুল, সদস্য সচিব শ্রী আবু সরকার।
এ সময় অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ও সিলেট জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে উপস্থিত ছিলেন, সিলেট জেলা ট্রাক মালিক গ্রæপের সহ সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক, যুগ্ম সম্পাদক জাকির হোসেন তালুকদার, কোষাধ্যক্ষ রিমাদ আহমদ রুবেল, সিলেট জেলা ট্রাক, পিকআপ ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরি সভাপতি আব্দুস সালাম, সহ সভাপতি জুবের আহমদ, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আমির উদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, সহ সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ স্বপন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদ, জেলা ট্রাক মালিক গ্রæপের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক রাজ্জিক লিটু, দফতর সম্পাদক আফজল চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক নুর আহমদ খান সাদেক, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সোহরাব হোসেন, নির্বাহী সদস্য মোঃ নুরুল আমীন, শাহাদত হোসেন, আকমাম আব্দুল্লাহ, জেলা ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের প্রচার সম্পাদক সামাদ রহমান, কোষাধ্যক্ষ রাজু আহমদ তুরু, নির্বাহী সদস্য শরিফ আহমদ, আলী আহমদ আলী, জলিল আহমদ, বেলাল আহমদ, দক্ষিণ সুরমা-মোগলাবাজার আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি কাউছার আহমদ, সহ সভাপতি জুমায়েল ইসলাম জুমেল, সাধারণ সম্পাদক মারুফ আহমদ, সহ সাধারণ সম্পাদক ফলিক আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফ আহমদ, কোষাধ্যক্ষ কতুব উদ্দিন, নির্বাহী সদস্য শাকিল আহমদ, জমির আলী, কুটি মিয়া, শাহপরাণ থানা আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি ফুল মিয়া, সম্পাদক আজিজুর রহমান রহিম, সাংগঠনিক সম্পাদক জলিল আহমদ, ফেঞ্চগঞ্জ উপজেলা আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি রাসেল আহমদ টিটু, সম্পাদক আহমদ লালু, কানাইঘাট আাঞ্চলিক কমিটির সভাপতি জসিম উদ্দিন, পশ্চিম গোয়াইনঘাট আাঞ্চলিক কমিটির সভাপতি হাফিজুর রহমান, সম্পাদক মুজিবুর রহমান, পূর্ব গোয়াইনঘাট আাঞ্চলিক কমিটির সভাপতি ছমেদ মিয়া, সম্পাদক আব্দুর রহিম, কোম্পনীগঞ্জ আাঞ্চলিক কমিটির সভাপতি হান্নান মিয়া, সম্পাদক মাহফুজ মিয়া, গোলাপগঞ্জ আাঞ্চলিক কমিটির সভাপতি বদরুল ইসলাম, সম্পাদক সায়েল আহমদ, বিয়ানীবাজার আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি মানিক উদ্দিন, সম্পাদক শাহাব উদ্দিন সাবুল, জকিগঞ্জ উপজেলা আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি রুবেল আহমদ, সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, জালালাবাদ থানা আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি কালা মিয়া, সম্পাদক আলমগীর, ওসমানীনগর থানা আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি সুরুজ আলী, সম্পাদক বাবুল মিয়া, বালাগঞ্জ আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি শ্রী সুজিব চন্দ্রগুপ্ত বাচ্চু, সম্পাদক মাহমুদ আব্দুল নুর, বিশ^নাথ আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি আলাল মিয়া, সম্পাদক মকবুল ইসলাম, এয়ারপোর্ট থানা আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি আব্দুল আহাদ, সম্পাদক আজাদ মিয়া প্রমূখ। মিছিল-সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১০ লক্ষাধিক মানুষের জীবন-জিবিকা রক্ষার্থে আমরা মানবতার জন্য শান্তিপর্ণ ভাবে ৭২ ঘন্টার ধর্মঘট পালন করছি। আমাদের বিশ^াস প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা মালিক-শ্রমিকদের জীবন রক্ষা করবেন।
সিলেট বিভাগীয় ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান মালিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি গোলাম হাদী ছয়ফুল বলেন, প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে কোনো সিদ্বান্ত না হওয়ায় তারা ধর্মঘটে অনড় রয়েছে। মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ধর্মঘট চলবে।
তিনি বলেন, সিলেটের পাথর কোয়ারি বন্ধ থাকায় প্রায় ১৫ লাখ মালিক-শ্রমিক মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। এতে করে পরিবহন ব্যবসাসহ সব ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বৃহত্তর সিলেটের অর্থনৈতিক অবকাঠামো ভেঙে পড়েছে।
এরই মধ্যে পাথর কোয়ারি খুলে দিতে বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি ও সিলেট জেলায় ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট পালন করা হয়েছে। পাথর কোয়ারি খুলে দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও খুলে দেওয়া হচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে সিলেট বিভাগে সব ধরনের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।